গোপন কথা গোপন রাখুন
গোপন কথা গোপন রাখুন
মুহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আরিফি
এ প্রবচনটি খুবই প্রসিদ্ধ- 'কোনো গোপন কথা যদি দুইজন অতিক্রম করে তাহলে তা আর গোপন থাকে না।'
জনৈক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, 'এখানে দুইজন বলে কী বুঝানো হয়েছে?' সে নিজের ঠোঁটজোড়া দেখিয়ে বললো, 'এই দুইজন'!
অর্থাৎ কোনো গোপন কথা যদি আপনার দুই ঠোঁটের ফাঁক গলিয়ে একবার বের হতে পারে তাহলে একে আর বেঁধে রাখা যাবে না। এটা ছড়িয়ে পড়বে দিগ দিগন্তে।
ইতোমধ্যে আমি জীবনের পঁয়ত্রিশটি বছর অতিক্রম করেছি। এ দীর্ঘ জীবনে যখনই কাউকে গোপন কিছু বলেছি এবং তা গোপন রাখতে অনুরোধ করছি, আমার মনে পড়ে না, কেউ আমাকে বলেছে, 'ভাই মুহাম্মাদ! আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমার এ কথাটি গোপন রাখতে পারবো না; বরং সবাই দৃঢ় শপথ করে বলেছে, আপনার এ কথা কাক পক্ষিও কোনো দিন জানবে না। বাস্তবে যাকেই আপনি কোনো গোপন কথা বলবেন, সে আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, আমার ডান হাতে যদি সূর্য আর বাম হাতে চন্দ্র রাখা হয় কিংবা আমার গর্দানের ওপর যদি তরবারি উত্তোলন করা হয় তবুও তা কোনো দিন আমার মুখ থেকে বের হবে না।
এরপর আপনি পরম বিশ্বাসে তার কাছে নিজের গোপন কিছু কথা বললেন। এরপর দু'তিন মাস অপেক্ষা করে দেখুন আপনার গোপন কথাটি আর গোপন রয়নি। সারা এলাকা ঘুরে আপনার কাছে ফিরে এসেছে।
এটা অন্যের দোষ নয়। দোষটা আপনার। ভুল তো আপনিই প্রথম করেছেন। আপনি ভুলে গেছেন, 'কোনো গোপন কথা যদি দুই ঠোঁট অতিক্রম করে তাহলে তা আর গোপন থাকে না।'
আসলে কারো ওপর সাধ্যাতীত কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়। কবি কী সুন্দর বলেছেন,
তোমার গোপন কথা তুমিই গোপন রাখতে পারলে না অন্য কেউ তা গোপন রাখবে এ আশা তুমি কিভাবে করো?
আমি বিষয়টি অনেকের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছি ফলাফল একই। সমস্যা হলো, আপনি হয়তো কারো কাছে পরামর্শ চাইতে গিয়ে গোপন কিছু বলতে বাধ্য হলেন। সে আপনাকে পরামর্শও দিলো। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যাবে, সে আপনার গোপন বিষয়টি ফাঁস করে দিয়েছে। ফলে সে চিরদিনের জন্য আপনার কাছে ঘৃণিত হয়ে গেল। ইতিহাসের একটি আশ্চর্য ঘটনা।
বদরযুদ্ধের আগের ঘটনা। রাসূল শাম থেকে কোরাইশের বাণিজ্যিক কাফেলার প্রত্যাবর্তনের সংবাদ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এরপর অনতিবিলম্বে তাদের উদ্দেশে রওয়ানা হলেন। কোরাইশ কাফেলার সরদার আবু সুফিয়ান বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গিফার গোত্রের 'যামযাম বিন আমর' নামক জনৈক ব্যক্তিকে এ সংবাদ দ্রুত মক্কায় পৌছানোর জন্য পাঠালো। যামযাম তাজাদম উট নিয়ে দ্রুতগতিতে মক্কার পথে অগ্রসর হলো।
সেখান থেকে মক্কা ছিলো কয়েকদিনের পথ। এদিকে মক্কাবাসী এ সম্পর্কে তখনো কিছুই জানে না। এ সময়ের এক রাতের ঘটনা। (রাসূলের ফুফু) আতিকা বিনতে আবদুল মুত্তালিব ভয়ঙ্কর একটি স্বপ্ন দেখলেন। রাত শেষে ভোর হতেই তিনি আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিবকে ডেকে বললেন, 'ভাই! গত রাতে আমি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি স্বপ্ন দেখেছি। আমার মনে হচ্ছে, আমাদের সম্প্রদায়ের ওপর কোনো বিপদ আপতিত হবে। আমার স্বপ্নের কথা আমি তোমাকে বলবো। তুমি কিন্তু এটা কাউকে বলবে না।'
আব্বাস বললেন, 'ঠিক আছে। তুমি কি দেখেছো, বলো।' তিনি বললেন: 'আমি জনৈক উট-আরোহীকে দেখলাম দ্রুতবেগে এগিয়ে আসছে। সে এসে 'আবতাহ' উপত্যাকায় থেমে গেলো এবং সজোরে চিৎকার করে বললো, 'হে পরিণতির দিকে প্রত্যাবর্তনকারীরা! তিনদিনের মধ্যে নিজ নিজ মৃত্যু উপত্যাকায় যাও!'
আতিকা আরো বললেন, এরপর আমি দেখলাম, আওয়াজ শুনে লোকেরা তার চতুর্পাশে সমবেত হলো। এরপর লোকটি মসজিদে হারামে গেলো। লোকেরাও তার পিছু পিছু গেলো। হঠাৎ তার উটটি তাকে নিয়ে কাবার ছাদে আরোহণ করলো। সেখানে আরোহণ করে সে আগের মতো আবার চিৎকার করে বললো, 'হে পরিণতির দিকে প্রত্যাবর্তনকারীরা! তিনদিনের মধ্যে নিজ নিজ মৃত্যু উপত্যকায় যাও!'
তারপর সে তার উটটি নিয়ে 'আবূ কুবাইস' পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে আগের ন্যায় আওয়াজ দিলো, 'হে পরিণতির দিকে প্রত্যাবর্তনকারীরা! তিনদিনের মধ্যে নিজ নিজ মৃত্যু উপত্যকায় যাও!' এরপর সে পাহাড়ের চূড়া থেকে একটি পাথর নিয়ে নিচে নিক্ষেপ করলো। পাথরটি গড়িয়ে পড়তে পড়তে পাহাড়ের পাদদেশে এসে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেলো এবং ছোট ছোট নুড়িতে পরিণত হলো।
মক্কার এমন কোনো ঘর নেই যাতে সে নুড়ি প্রবেশ করে নি। আব্বাস অস্থির হয়ে বললেন, 'আল্লাহর শপথ! অবশ্যই এটা একটা ভয়ঙ্কর স্বপ্ন!'
আব্বাস এ স্বপ্নের কথা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করলেন। তিনি ভাবলেন, স্বপ্নের কথা ছড়িয়ে পড়লে তার সমস্যা হতে পারে। তাই তিনি আতিকাকে সকর্ত করে বললেন, 'তুমি এ স্বপ্নের কথা আর কারো কাছে প্রকাশ করবে না।'
এই স্বপ্নের কথা ভাবতে ভাবতে আব্বাস বেরিয়ে এলেন। পথিমধ্যে বন্ধু ওলীদ বিন ওতবার সঙ্গে তার দেখা হলো। ওলীদকে তিনি স্বপ্নের কথা জানালেন। তবে সে যেন এ স্বপ্নের কথা গোপন রাখে তিনি এ ব্যাপারে তার কাছ থেকে নিশ্চয়তা নিলেন।'
ফেরার পথে ওলিদের সাথে তার পুত্র ওতবার দেখা হলো। পুত্রকে সে স্বপ্নের ঘটনাটি জানিয়ে দিলো। কিছুক্ষণ না যেতেই ওতবা তার কয়েকজন বন্ধুকে স্বপ্নের কথা বললো। এভাবে এ স্বপ্নের কথা মক্কার লোকদের কানে কানে ছড়িয়ে পড়লো। কোরাইশরা তাদের বৈঠকসমূহে এ নিয়ে আলোচনা করতে লাগলো।
দুপুরে আব্বাস কাবা ঘর তাওয়াফের উদ্দেশ্যে হেরেমে গেলেন। আবূ জাহেল তখন কোরাইশের কয়েকজন লোকের সঙ্গে কাবা ঘরের ছায়ায় বসে আতিকার স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা করছিলো।
আব্বাসকে দেখে আবু জাহেল বললো, 'আবুল ফযল! তাওয়াফ শেষ হলে আমার সাথে একটু দেখা করবে।'
আব্বাস চিন্তিত হলেন। আবু জাহেল তার কাছে কী চায়? আব্বাসের কল্পনাতেও ছিলো না যে, আবু জাহেল তাকে আতিকার স্বপ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারে। তাওয়াফ শেষ করে আব্বাস আবু জাহেলের কাছে এসে বসলেন। আবু জাহল তাকে বললো, 'হে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র! তোমাদের বংশে কখন থেকে আবার মহিলা নবীর আবির্ভাব ঘটলো?' আব্বাস বললেন, 'আপনি কিসের কথা বলছেন?' 'আতিকার স্বপ্নের কথা।'
আব্বাস শঙ্কিত হলেন। তিনি বললেন, 'আতিকা! আতিকা আবার কী দেখেছে?'
আবু জাহল বললো, " আবদুল মুত্তালিবের বেটা! এতদিন পর্যন্ত জানতাম তোমাদের বংশের একজন পুরুষ নবুয়তি দাবি করেছে। তোমরা মনে হয় এতে সন্তুষ্ট নও। তাই এখন তোমাদের একজন নারী 'নবুয়তি' দাবি করতে যাচ্ছে।!
আতিকা নাকি স্বপ্নে জনৈক আগন্তুককে বলতে শুনেছে, 'তিনদিনের মধ্যে তোমরা নিজ নিজ মৃত্যু উপত্যাকায় যাও'।
আমরা তিনদিন দেখবো। এর মধ্যে যদি আতিকার স্বপ্ন বাস্তব হয়, তাহলে তো হলো। আর যদি তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো কিছু প্রকাশ না পায়, তাহলে তোমাদের নামে 'আরবের শ্রে'মিথ্যাবাদী' উপাধি রটিয়ে দেবো।"
আব্বাস উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। আবু জাহলকে তিনি কোনো উত্তর দিলেন না। তিনি স্বপ্নের কথা অস্বীকার করলেন।
এরপর সবাই যার যার কাজে চলে গেলো। আব্বাস সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসতেই বনু মুত্তালিবের মহিলারা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে তাকে ঘিরে ধরলো। তারা বললো, 'এতদিন তোমরা এই পাপি'বদমাশটাকে পুরুষদের ওপর কর্তৃত্ব করার সুযোগ দিয়েছো। আর এখন সে নারীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করতে শুরু করলো আর তুমি নিরবে তা শুনে চলে আসলে! তোমাদের পুরুষদের মধ্যে কি আত্মসম্মানবোধ বলতে কিছুই নেই?'
মহিলাদের এসব কথায় আব্বাসের আত্মমর্যাদায় আঘাত হানলো। তিনি উত্তেজিত হয়ে বললেন, 'আল্লাহর কসম! আবূ জাহেল যদি আবারো এমন কিছু বলে, তাহলে অবশ্যই আমি এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব।' আতিকার স্বপ্ন দেখার তিন দিন পার হলো। আব্বাস কাবার দিকে গেলেন। তার মনে তখনো পূঞ্জিভূত ক্ষোভ।
মসজিদে হারামে প্রবেশ করেই আবু জাহেলকে দেখতে পেয়ে তিনি তার দিকে এগিয়ে গেলেন। তিনি মনে মনে চাচ্ছিলেন, আবু জাহেল যেন সেদিনের কথার পুনরাবৃত্তি করে। তাহলে তিনি আজ তার উচিত জবাব দেবেন!
কিন্তু আবূ জাহেল আচমকা মসজিদের দরজা দিয়ে দ্রুত বের হয়ে গেলো। আব্বাস এটা দেখে অবাক হয়ে গেলেন। কেননা, আজ তিনি তর্ক- বিতর্কের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন!
আব্বাস মনে মনে বললেন, 'অভিশপ্তটার হলো কী? আমাকে দেখে ভয়েই কি সে পগাড়পাড় হলো?
ঠিক সেই মুহূর্তে আবু জাহেল যামযাম বিন আমর গিফারীর চিৎকার শুনতে পেলো। সেই যামযাম বিন আমর গিফারী, আবু সুফিয়ান যাকে কোরাইশদের কাছে সংবাদ দিয়ে পাঠিয়েছিলো। যামযাম উন্মুক্ত উপত্যকায় উটের ওপর দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলছিলো। সেকালের রীতি অনুযায়ী বিপদ সংকেত বোঝাতে সে তার উটের নাক কেটে ফেললো। কর্তিত নাকের ক্ষতস্থান থেকে তাজা রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল।
এরপর আসন্ন বিপদের ভয়াবহতা বোঝাতে সে নিজের গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেললো। এরপর চিৎকার করে বলতে লাগলো, 'হে কোরাইশ সম্প্রদায়, বিপদ! মহাবিপদ!! আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যকাফেলায় তোমাদের যে অর্থ- সম্পদ রয়েছে, তা ছিনিয়ে নিতে মুহাম্মাদ তার সঙ্গীদের নিয়ে আক্রমণ করতে যাচ্ছে। তোমরা তা রক্ষা করতে পারবে বলে মনে হয় না!'
এরপর সে আরো উচ্চ আওয়াজে চিৎকার করে বললো, 'সাহায্য! সাহায্য!' এ সংবাদ পেয়েই কোরাইশরা যুদ্ধপ্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। আর তাদের জন্য বদরপ্রান্তরে অপেক্ষা করছিল পরাজয় ও লাঞ্ছনা।
ভেবে দেখুন, গোপনীয়তা রক্ষার প্রত্যয় ও পরিপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও স্বপ্নের বিষয়টি কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো! গোপন তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আরেকটি ঘটনা।
ইসলাম গ্রহণ করার পর ওমর তার ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি সবাইকে জানাতে চাইলেন। তাই তিনি কথা ছড়ানোতে মক্কার সবচেয়ে দক্ষ ব্যক্তির কাছে গিয়ে বললেন, 'তোমাকে একটি গোপন কথা বলছি। তুমি তা গোপন রাখবে। কাউকে বলবে না।' সে বললো, 'গোপন কথাটা কী?'
ওমর বললেন, 'আমি মুসলমান হয়েছি। সাবধান! কাউকে বলবে না কিন্তু।'
এরপর ওমর তার কাছ থেকে চলে এলেন। এখনো তিনি বেশি দূর যান নি। এরই মধ্যে সেই লোকটি মানুষের কাছে গিয়ে গিয়ে বলতে লাগলো, 'ভাই! শুনেছো, ওমর তো ইসলাম গ্রহণ করেছে। আশ্চর্য! যেন এক ভ্রাম্যমান সংবাদসংস্থা!
একদিন রাসূল আনাস-কে কোনো প্রয়োজনে কোথাও পাঠালেন। আনাস তার মায়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'রাসূল তোমাকে কোথায় পাঠিয়েছেন?' তিনি বললেন, 'আল্লাহর কসম! আমি রাসূল-এর গোপন বিষয় প্রকাশ করব না।'
রাসূল সাহাবিদেরকে গোপনীয়তা রক্ষার শিক্ষা দিয়েছিলেন যেন তারা দায়িত্ব পালনে যোগ্য হয়ে গড়ে ওঠে। সেই শৈশবেও আনাস (রা.) গোপনীয়তা রক্ষায় যত্নবান ছিলেন। আজকের যুগে আপনি আনাসের দৃষ্টান্ত কোথায় খুঁজে পাবেন?
আয়েশা বর্ণনা করেন, একদিন ফাতেমা (রা.) হেঁটে আসছিলেন। তার হাঁটার ভঙ্গি ছিল হুবহু রাসূল-এর হাঁটার ভঙ্গির মতো! রাসূল বললেন, 'স্বাগতম মেয়ে আমার!' এরপর রাসূল ফাতেমা- কে তার ডানে বা বামে বসিয়ে গোপনে কিছু বললেন। শুনে ফাতেমা কাঁদতে লাগলেন।
আমি (আয়েশা) তাকে বললাম, 'তুমি কাঁদছো কেন বেটি?' সে কিছু বললো না।
এরপর রাসূল তাকে আবার কানে কানে কিছু বললেন। এবার হাসতে লাগলেন
আমি (আয়েশা) বললাম, 'আজকের ন্যায় আনন্দ এবং বেদনার এমন সহাবস্থান আর কখনো আমি দেখি নি!'
আমি ফাতেমাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'রাসূল কী বললেন?'
তিনি বললেন, 'আমি রাসূল-এর গোপন কথা প্রকাশ করতে পারবো না।'
এর কিছুদিন পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করলেন। এরপর আমি তাকে পুনরায় বিষয়টি জিজ্ঞেস করলাম।
ফাতেমা বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছিলেন, জিবরাঈল আ. প্রতিবছর একবার আমাকে পুরো কুরআন শোনাতেন, আমিও শোনাতাম। কিন্তু এ বছর তিনি দু'বার শুনিয়েছেন। আমি এটাকে আমার তিরোধানের পূর্বলক্ষণ বলে মনে করছি। আর আহলে বাইতের মধ্যে সর্বপ্রথম তুমিই আমার সঙ্গে মিলিত হবে।' রাসূলের এ কথা শুনে আমি কেঁদেছি। এরপর রাসূল বলেছেন, 'তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তুমি জান্নাতি নারীদের নেতৃত্ব দিবে?' রাসূল-এর এ কথা শুনে আমি হেসেছি।
মনে রাখবেন, মানুষের একান্ত কথাগুলো আপনি যত গোপন রাখতে পারবেন, তাদের কাছে আপনি তত বেশি আস্থাভাজন হতে পারবেন। আপনার জন্য তারা তাদের মনের দুয়ার খুলে দেবে। আপনি অন্যের গোপন কথা যত গোপন রাখতে পারবেন তাদের কাছে আপনার মর্যাদা তত বৃদ্ধি পাবে। তারা উপলব্ধি করবে, আপনি একজন বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন বন্ধু।
তাই নিজের গোপন কথাগুলি নিজের মাঝে রাখার এবং অন্যের গোপন কথা সংরক্ষণ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শিক্ষা:
বড়রা বলেছেন...
যে আপনার গোপন তথ্য জেনে ফেললো,
আপনি তার হাতে বন্দি হয়ে গেলেন।
আমাদের ওয়েবসাইটের হোমপেজে ঘুরে দেখুন!